১৯৭১ সালের মার্চে ইয়াহিয়া-মুজিব-ভুট্টো ত্রিপাক্ষিক আলোচনার বিষয়বস্তু এবং আলোচনা ব্যর্থতার কারণ ।। Yahya-Mujib-Bhutto talks in March 1971
১৯৭১ সালের মার্চে ইয়াহিয়া-মুজিব-ভুট্টো ত্রিপাক্ষিক আলোচনা: বিশদ বিশ্লেষণ
১৯৭১ সালের মার্চ মাসে তৎকালীন পাকিস্তানের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ছিল অত্যন্ত উত্তাল। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ দল আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করলেও, ক্ষমতা হস্তান্তরে পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী এবং পিপিপি চেয়ারম্যান জুলফিকার আলি ভুট্টো নানাভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছিলেন। এই চরম রাজনৈতিক সংকট নিরসনের শেষ চেষ্টা হিসেবে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ইয়াহিয়া খান, আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ মুজিবুর রহমান এবং পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) চেয়ারম্যান জুলফিকার আলি ভুট্টোর মধ্যে ঢাকায় একটি ত্রিপাক্ষিক আলোচনার আয়োজন করা হয়। এই আলোচনার মূল উদ্দেশ্য ছিল একটি সাংবিধানিক কাঠামো তৈরি এবং নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কাছে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করা, কিন্তু শেষ পর্যন্ত এই আলোচনা ব্যর্থ হয় এবং এর ফলস্বরূপ পূর্ব পাকিস্তানে সামরিক অভিযান শুরু হয়, যা পরবর্তীতে বাংলাদেশের স্বাধীনতার দিকে নিয়ে যায়।
আলোচনার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট: সংকটময় ১৯৭১ সালের শুরুর দিনগুলি
১৯৭০ সালের
৭
ডিসেম্বর ও
১৭
জানুয়ারির সাধারণ
নির্বাচনে পূর্ব
পাকিস্তানের জনগণের
আকাঙ্ক্ষার এক
সুস্পষ্ট প্রতিফলন ঘটে।
শেখ
মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ
পাকিস্তানের জাতীয়
পরিষদে
১৬৯টি
আসনের
মধ্যে
১৬৭টি
আসন
লাভ
করে
একক
সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন
করে।
এই
ঐতিহাসিক বিজয়ের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ
পাকিস্তানের সংবিধান প্রণয়ন এবং
সরকার
গঠনের
নৈতিক
ও
আইনগত
অধিকার
লাভ
করে।
অন্যদিকে, পশ্চিম
পাকিস্তানে জুলফিকার আলি
ভুট্টোর নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান পিপলস
পার্টি
(পিপিপি)
৮১টি
আসন
পেয়ে
দ্বিতীয় বৃহত্তম দল
হিসেবে
আবির্ভূত হয়।
নির্বাচনী ফলাফলের পর স্বাভাবিকভাবেই আশা করা হয়েছিল যে, সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা হিসেবে শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে। কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানের সামরিক-বেসামরিক আমলাতন্ত্র এবং কিছু রাজনৈতিক মহলের কাছে আওয়ামী লীগের ৬-দফা কর্মসূচি, যা ছিল প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসনের একটি সুস্পষ্ট রূপরেখা, পাকিস্তানের অখণ্ডতার জন্য হুমকি বলে প্রতীয়মান হয়। ইয়াহিয়া খান প্রথমে ৩ মার্চ ঢাকায় জাতীয় পরিষদের অধিবেশন আহ্বান করলেও, জুলফিকার আলি ভুট্টোর চাপ এবং পশ্চিম পাকিস্তানের সামরিক নেতৃত্বের আপত্তিতে ১ মার্চ তিনি আকস্মিকভাবে সেই অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করেন। এই আকস্মিক স্থগিতাদেশ পূর্ব পাকিস্তানে তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিবাদের জন্ম দেয়। শেখ মুজিবুর রহমান অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন, যা পূর্ব পাকিস্তানে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং কার্যত বেসামরিক শাসন অচল করে দেয়। এই প্রেক্ষাপাপটেই, সংকট নিরসনের জন্য ইয়াহিয়া খান আলোচনার প্রস্তাব দেন এবং ১৫ মার্চ তিনি ঢাকায় আসেন। ১৬ মার্চ থেকে শুরু হয় ইয়াহিয়া-মুজিব-ভুট্টো ত্রিপাক্ষিক আলোচনা।
আলোচনার মূল বিষয়বস্তু ও পক্ষসমূহের অবস্থান
ত্রিপাক্ষিক আলোচনার প্রধান
এজেন্ডা ছিল
একটি
নতুন
সাংবিধানিক কাঠামো
তৈরি
এবং
শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা
হস্তান্তর। তবে,
প্রতিটি পক্ষের
নিজস্ব
স্বার্থ, ভিন্ন
দৃষ্টিভঙ্গি এবং
অনড়
অবস্থানের কারণে
আলোচনা
শুরু
থেকেই
জটিলতায় পূর্ণ
ছিল।
আওয়ামী
লীগের ৬-দফা ভিত্তিক সংবিধান: আলোচনার কেন্দ্রে ছিল
শেখ
মুজিবুর রহমানের ৬-দফা কর্মসূচি। এই
দফায়
প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্রনীতি, মুদ্রা
ও
কেন্দ্রীয় বাণিজ্য ছাড়া
অন্যান্য সকল
বিষয়
প্রদেশের হাতে
রাখার
প্রস্তাব করা
হয়েছিল। আওয়ামী লীগ
চেয়েছিল, ১৯৭০
সালের
নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের
দেওয়া
ম্যান্ডেট অনুযায়ী এই
৬-দফার ভিত্তিতেই একটি
নতুন
সংবিধান প্রণীত
হবে
এবং
এর
মাধ্যমেই ক্ষমতা
হস্তান্তর হবে।
মুজিবের অবস্থান ছিল
স্পষ্ট:
সংবিধান হবে
জনগণের
আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন এবং
প্রদেশগুলো পাবে
পূর্ণ
স্বায়ত্তশাসন। তিনি
নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে অবিলম্বে ক্ষমতা
হস্তান্তরের দাবি
জানান।
ভুট্টোর
ক্ষমতা ভাগাভাগির
আকাঙ্ক্ষা ও ৬-দফার বিরোধিতা: জুলফিকার আলি
ভুট্টো,
যিনি
পশ্চিম
পাকিস্তানের সর্ববৃহৎ দলের
নেতা
ছিলেন,
তিনি
মনে
করতেন
যে,
৬-দফা পাকিস্তানকে দুর্বল
করে
দেবে
এবং
কেন্দ্রীয় সরকারকে কার্যকরভাবে ক্ষমতাহীন করে
দেবে।
তিনি
'একক
পাকিস্তান' এবং
শক্তিশালী কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে
ছিলেন।
তার
মূল
দাবি
ছিল
কেন্দ্রে ক্ষমতা
ভাগাভাগি, বিশেষ
করে
সংবিধান প্রণয়নে পিপিপির একটি
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
থাকা।
তিনি
স্পষ্ট
ঘোষণা
দেন,
"এধার
হাম,
ওধার
তুম"
(এখানে
আমরা,
ওখানে
তোমরা),
যার
অর্থ
ছিল
পূর্ব
পাকিস্তানে আওয়ামী লীগ
সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও
পশ্চিম
পাকিস্তানে পিপিপি'র গুরুত্ব অনস্বীকার্য এবং
উভয়
পক্ষের
সম্মতি
ছাড়া
কোনো
সংবিধান কার্যকর হবে
না।
তিনি
৬-দফাকে 'আলাদা হওয়ার
চুক্তি'
হিসেবে
আখ্যায়িত করেন
এবং
এর
প্রতি
তাঁর
অনীহা
ছিল
প্রকট।
ইয়াহিয়া খানের দ্বিমুখী নীতি ও সামরিক কৌশল: রাষ্ট্রপতি ইয়াহিয়া খান আলোচনার একটি মাঝামাঝি অবস্থানে থাকার ভান করলেও, তার মূল উদ্দেশ্য ছিল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা এবং সামরিক হস্তক্ষেপের জন্য সময় নেওয়া। তিনি একদিকে সংলাপ চালিয়ে যাওয়ার কথা বলছিলেন, অন্যদিকে গোপনে সামরিক অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তিনি সামরিক শাসন অবসানের পর একটি অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থার মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রস্তাব করেন, যেখানে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হবে এবং নতুন সংবিধান প্রণীত হবে। তবে তার মূল লক্ষ্য ছিল ৬-দফাকে নস্যাৎ করা এবং পাকিস্তানের অখণ্ডতা রক্ষার নামে সামরিক নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখা। তার দল সামরিক বাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা, যারা কোনো অবস্থাতেই পূর্ব পাকিস্তানের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে রাজি ছিলেন না, তাদের পরিকল্পনা ছিল ভিন্ন।
আলোচনার ব্যর্থতার মূল কারণগুলি
ইয়াহিয়া-মুজিব-ভুট্টো ত্রিপাক্ষিক আলোচনা
ব্যর্থ
হওয়ার
পেছনে
ছিল
একাধিক
জটিল
কারণ,
যা
তৎকালীন রাজনৈতিক বাস্তবতা এবং
প্রধান
ব্যক্তিত্বদের অনমনীয় অবস্থানের ফল:
১. ৬-দফার ব্যাখ্যা
ও বাস্তবায়ন নিয়ে মৌলিক
বিরোধ: আলোচনার প্রধান
বিষয়বস্তু ৬-দফাই শেষ পর্যন্ত ব্যর্থতার মূল
কারণ
হয়ে
দাঁড়ায়। শেখ
মুজিবুর রহমান
৬-দফাকে একটি সাংবিধানিক ভিত্তি
হিসেবে
দেখেছিলেন যা
পূর্ব
পাকিস্তানের দীর্ঘদিনের বঞ্চনার অবসান
ঘটাবে।
অন্যদিকে, ইয়াহিয়া খান
ও
ভুট্টো
৬-দফাকে পাকিস্তানের অখণ্ডতার জন্য
হুমকিস্বরূপ মনে
করতেন।
তারা
এটিকে
একটি
বিচ্ছিন্নতাবাদী এজেন্ডা হিসেবে
দেখতেন,
যা
কেন্দ্রীয় সরকারকে দুর্বল
করে
দেবে
এবং
পাকিস্তানের ভবিষ্যৎ অস্তিত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে।
বিশেষত,
প্রতিরক্ষা ও
পররাষ্ট্রনীতি কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে
থাকলেও,
মুদ্রা
ও
রাজস্ব
সম্পর্কিত ৬-দফার ব্যাখ্যা নিয়ে
তীব্র
মতবিরোধ দেখা
দেয়।
আওয়ামী লীগ
চায়,
মুদ্রা
ও
রাজস্ব
নীতি
প্রদেশগুলো নিয়ন্ত্রণ করুক,
যা
পশ্চিম
পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী মানতে
নারাজ
ছিল।
২. ভুট্টোর অনমনীয়তা ও ক্ষমতা ভাগাভাগির আকাঙ্ক্ষা: জুলফিকার আলি ভুট্টো শুরু থেকেই আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতাকে মেনে নিতে পারেননি। তিনি মনে করতেন, ৬-দফার ভিত্তিতে ক্ষমতা হস্তান্তর হলে পশ্চিম পাকিস্তানের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হবে। তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতা ভাগাভাগির জন্য জোরালোভাবে চাপ সৃষ্টি করেন, যেখানে পিপিপি'র একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকবে। অথচ, আইনত এবং নৈতিকভাবে এই দাবি ছিল অযৌক্তিক, কারণ তার দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। ভুট্টোর এই অনড় অবস্থান এবং তার নিজের রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা আলোচনাকে আরও জটিল করে তোলে এবং সমঝোতার পথ রুদ্ধ করে দেয়। তিনি আলোচনার প্রতিটি পর্যায়ে শেখ মুজিবুর রহমানের ৬-দফা প্রস্তাবের কঠোর সমালোচনা করেন এবং এটিকে পাকিস্তানের বিভাজনের পথ হিসেবে তুলে ধরেন।
৩. ইয়াহিয়া খানের ছলনা
ও সামরিক
প্রস্তুতি: ইয়াহিয়া খান
আলোচনার টেবিলে
সমাধানের কথা
বললেও,
তার
আসল
উদ্দেশ্য ছিল
সময়ক্ষেপণ করা
এবং
পূর্ব
পাকিস্তানে সামরিক
অভিযান
'অপারেশন সার্চলাইট' এর
প্রস্তুতি সম্পন্ন করা।
আলোচনার আড়ালে
সামরিক
বাহিনী
পূর্ব
পাকিস্তানে সৈন্য
সমাবেশ
করছিল,
অস্ত্রশস্ত্র মজুদ
করছিল
এবং
সামরিক
অভিযানের ছক
আঁকছিল। তিনি
আলোচনার একটি
অন্তর্বর্তীকালীন সাংবিধানিক ব্যবস্থার প্রস্তাব করেন,
যা
আসলে
৬-দফাকে এড়িয়ে যাওয়ার একটি
কৌশল
ছিল।
২৫শে
মার্চ
১৯৭১
সালে
হঠাৎ
করে
তিনি
ঢাকা
ত্যাগ
করেন,
যা
সামরিক
অভিযানের পূর্বলক্ষণ ছিল।
তার
দ্বিমুখী নীতি
এবং
চূড়ান্তভাবে সামরিক
সমাধানের সিদ্ধান্তই আলোচনার ব্যর্থতা নিশ্চিত করে।
৪. আস্থার অভাব ও পরস্পরের প্রতি গভীর
অবিশ্বাস: পূর্ব ও পশ্চিম
পাকিস্তানের মধ্যে
দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও
সাংস্কৃতিক বৈষম্য
এবং
বঞ্চনার ইতিহাস
ছিল।
এই
প্রেক্ষাপটে ইয়াহিয়া, মুজিব
ও
ভুট্টোর মধ্যে
গভীর
আস্থার
অভাব
ছিল।
মুজিব
ইয়াহিয়া ও
ভুট্টোর সদিচ্ছা নিয়ে
সন্দিহান ছিলেন,
কারণ
বারবার
প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ
এবং
বৈষম্যের শিকার
হওয়ার
অভিজ্ঞতা পূর্ব
বাংলার
মানুষের ছিল।
অন্যদিকে, ইয়াহিয়া ও
ভুট্টো
মুজিবকে একজন
'বিচ্ছিন্নতাবাদী' নেতা
হিসেবে
দেখতেন,
যদিও
মুজিব
সবসময়
'অখণ্ড
পাকিস্তানের' рамках থেকেই ৬-দফার কথা বলছিলেন। এই
পারস্পরিক অবিশ্বাস কোনো
গঠনমূলক সমাধানের পথে
বড়
বাধা
হয়ে
দাঁড়ায়।
৫. গণপরিষদের অধিবেশন স্থগিতের প্রভাব: ১ মার্চ জাতীয় পরিষদের অধিবেশন আকস্মিকভাবে স্থগিত করার কারণে পূর্ব পাকিস্তানে তীব্র অসন্তোষ দেখা দেয় এবং অসহযোগ আন্দোলন শুরু হয়। এই আন্দোলনের ফলে পূর্ব পাকিস্তানের প্রশাসন কার্যত অচল হয়ে পড়ে এবং শেখ মুজিবুর রহমানই হয়ে ওঠেন পূর্ব পাকিস্তানের কার্যত সরকারপ্রধান। এই পরিস্থিতিতে আলোচনা শুরু হলেও, পূর্ব পাকিস্তানে যে গণঅভ্যুত্থান চলছিল, তা সামরিক জান্তার জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায় এবং তারা আলোচনার মাধ্যমে একটি রাজনৈতিক সমাধান দেওয়ার পরিবর্তে সামরিক শক্তি প্রয়োগের দিকে ঝুঁকে পড়ে।
উপসংহার
১৯৭১ সালের
মার্চের ইয়াহিয়া-মুজিব-ভুট্টো ত্রিপাক্ষিক আলোচনা
ছিল
পাকিস্তানের ইতিহাসে একটি
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু
ব্যর্থ
অধ্যায়। এই
আলোচনা
যদি
সফল
হতো,
তাহলে
হয়তো
পাকিস্তানের বিভাজন
এবং
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এড়ানো
যেত।
কিন্তু
সামরিক
জান্তার ক্ষমতা
হস্তান্তরে অনীহা,
জুলফিকার আলি
ভুট্টোর ক্ষমতা
ভাগাভাগির অন্যায্য দাবি
এবং
৬-দফাকে ঘিরে যে
মৌলিক
মতবিরোধ, সেগুলোর কারণেই
শেষ
পর্যন্ত আলোচনার টেবিলে
কোনো
সমাধান
আসেনি।
এই
ব্যর্থতার মধ্য
দিয়েই
পাকিস্তানের সামরিক
সরকার
পূর্ব
পাকিস্তানে ২৫শে
মার্চ
কালরাত্রিতে 'অপারেশন সার্চলাইট' শুরু
করে,
যা
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সূচনা
করে।
এই
আলোচনা
শুধু
একটি
রাজনৈতিক ব্যর্থতাই ছিল
না,
এটি
ছিল
একটি
জাতির
মুক্তির সংগ্রামের অবিচ্ছেদ্য অংশ,
যা
পরবর্তীতে একটি
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পথ
প্রশস্ত করে।
No comments